ক্যান্সারে আক্রান্ত বাঙ্গালি নারীদের এক-চতুর্থাংশ জরায়ুর ক্যান্সারে ভুগছেন। আমাদের দেশে নারীরা সাধারণত এসব সমস্যা সম্পর্কে আলোচনা করতে চায় না। ফলে ক্যান্সার ধীরে ধীরে শরীরে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। সাধারনত লাসিকা ও রক্তের মাধ্যমে তা লিভার, ফুসফুস ও মস্তিষ্কে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। অধিকাংশ সময়ই জরায়ুর ক্যান্সারে আক্রান্তরা এমন সময়ে বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হন যে তখন আর কিছুই করার থাকে না। ফলে জীবনঘাতী এই ক্যান্সার কেড়ে নিচ্ছে বহু প্রাণ।
হিউমান প্যাপিলোমা ভাইরাস
হিউমান প্যাপিলোমা ভাইরাস মূলত জরায়ু ক্যান্সারের জন্য দায়ী। এই ভাইরাসের অনেক গুলো ধরন রয়েছে। তবে এর মধ্যে ৪০ ধরনের হিউমান প্যাপিলোমা ভাইরাস ছড়ায় যৌনতার মাধ্যমে। এখানে জানা থাকা দরকার এই ভাইরাস শুধু মাত্র যৌন মিলনের মাধ্যমেই ছড়ায়না। জেনিটিকাল এবং মুখ দিয়ে যৌনাংগ স্পর্শের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে এই ভাইরাস।
আরো যেসব কারণে জরায়ু ক্যন্সারের ঝুকি বাড়ে-
- বাল্যবিবাহ
- জন্মনিয়ন্ত্রন পিল (অনেক দিন ধরে খেলে, ৫ বছর বা তার বেশী)
- ধুমপান, সিগেরেটে এক প্রকার রাসায়নিক পদার্থ থাকে যা জরায়ু থাকা কোষ গুলোকে নষ্ট করে ঝুকি বাড়ায়
জরায়ু ক্যান্সারের ঝুকি বেশী থাকে যাদের বয়্যস বেশী এমন নারীদের, বিশেষ করে যাদের বয়স ৩৫ বা তার বেশী।
জরায়ু কি ও সন্তান জন্মদানে জরায়ুর কাজ কি?
জরায়ু ক্যান্সারের কারণ:
চলুন জেনে নেই কি কি কারণে জরায়ু ক্যন্সারের ঝুকি বাড়ে-
- বাল্যবিবাহ জরায়ু ক্যন্সারের ঝুকি বাড়ায়। তাই ১৮ বছরের কম বয়সে বিবাহ করা উচিৎ নয়। বিয়ে ছাড়াও কম বয়সে যৌন মিলনের কারনে ঝুকি বাড়তে পারে।
- কম বয়সে সন্তানের মা হলে, বিশেষ করে ২০ বছরের কম বয়সে গর্ভধারণ করলে এই ঝুকি বাড়ে।
- কম সময়ের ব্যবধানে মা হলে, বেশী সন্তান প্রসবের কারনে
- একাধিক পুরুষের সাথে যৌন মিলনের কারনে।
- পরিচ্ছনতার অভাবে, যৌনাংগ অপরিচ্ছন্ন রাখার কারনে।
- ঘন ঘন যৌন রোগ হলে, জীবানু দ্বারা যৌনাংগ ঘন ঘন আক্রান্ত হলে জরায়ু ক্যন্সারের ঝুকি বাড়ে।
জরায়ু ইনফেকশন এর কারণ লক্ষণ
জরায়ুর ক্যান্সারের লক্ষণ:
জরায়ু ক্যন্সারের লক্ষণ প্রথম দিকে দেখা নাও দিতে পারে। তাই প্রতি দুই তিন বছরে এক বার করে বিশেষজ্ঞ দিয়ে যৌনাংগ পরিক্ষা করা দরকার। যখন লক্ষন দেখা দেয়, তখন আপনি নিচের লক্ষন গুলো পেতে পারেন –
- এক মাসিক থেকে আরেক মাসিকের মাঝে হালকা রক্তপাত হতে পারে
- পিরিওডের সময় ব্লিডিং বেশী পরিমানে হতে পারে, অনেক দিন ধরে হতে পারে
- যৌন মিলনের পর ব্যাথা অনুভব হতে পারে
- পিরিওড শেষ হবার পরও ব্লিডিং হতে পারে
- পিরিওড অনিয়মিত হতে পারে
- বয়সের সাথে সাথে মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরও মাসিকের রাস্তা দিয়ে রক্ত যাওয়া।
- যৌন মিলনের পর রক্ত যাওয়া
- যৌনাংগে বাদামি রংগের বা রক্তযুক্ত স্রাবের আধিক্য দেখা দেওয়া
- সাদা দুর্গন্ধযুক্ত যোনিস্রাব হওয়া।
জরায়ু বড় হয় কেন, হলে কি করবেন?
জরায়ু ক্যান্সারের প্রতিকার:
জরায়ু ক্যন্সার থেকে বাচতে হলে আপনার রোগটা যাতে না হয় সে দিকে বেশী মনযোগ দেয়া উচিৎ। বিশেষ করে আমাদের দেশের নারীরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই রোগ হয়েছে জানতে পারেন একেবারে শেষের দিকে। তখন আর তেমন কিছু করার থাকেনা। তাই রোগটা যাতে না হয় সে দিকে লক্ষ রাখা জরুরী। যৌনাজ্ঞ পরিষ্কার রাখুন, একাধিক পুরুষের সাথে যৌন মিলন এড়িয়ে চলুন, প্রাপ্ত বয়সের আগে যৌন মিলন করা থেকে বিরত থাকুন, নিয়মিত বিষেশজ্ঞ দিয়ে যৌন পথ পরিক্ষা করুন।
জরায়ু নিচে নেমে যায় কেন, প্রতিকার কি?
জরায়ু ক্যান্সার হলে কি করবেন:
- দ্রুত বিশেষজ্ঞের সাথে যোগাযোগ করুন
প্রতিরোধঃ
- প্রতি তিনবছর অন্তর স্বাস্থ্যকর্মীকে দিয়ে জরায়ু-মুখ অবশ্যই পরীক্ষা করাতে হবে।
- ৩০ বছরের বেশি বয়স হলেই জরায়ু-মুখ অবশ্যই পরীক্ষা করাতে হবে৷ তবে ১৮ বছরের পূর্বে এবং বিবাহিত মহিলাদের ক্ষেত্রে ২৫ বছর বয়স হলেই জরায়ু মুখ পরীক্ষা করাতে হবে।
জেনে নিন মাসিক বা পিরিয়ড কেনো হয়
সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমেই একে সহজেই প্রতিরোধ করা সম্ভব।
সাদা স্রাব হওয়ার কারণ ও প্রতিকার
Pingback: জরায়ু বড় হয় কেন, সমাধান কি? – NariBangla